বাচ্চাদের কৃমি তাড়ানোর ঘরোয়া উপায়

বাচ্চাদের পেটে কৃমি হওয়ার বিষয়টা খুবই সাধারণ একটি সমস্যা। তবে আমাদের এ সমস্যাকে ছোট করে দেখা মোটেই উচিত নয়। আজ আমরা জনব বাচ্চাদের কৃমি তাড়ানোর ঘরোয়া উপায়। বাচ্চাদের পেটে কৃমি হলে মনে করি খুবই সাধারণ বিষয়। আসলে মোটেও সাধারণত নয়। আবার এতটাও কঠিন বিষয় নয় যে ঘরোয়া ভাবে এর সমাধান পাওয়া যাবে না। তাই  বাচ্চাদের কৃমি তাড়ানোর ঘরোয়া উপায় নিয়েই কথা বলব আজ। আমরা দেখি প্রায় বাচ্চাদেরই কৃমি হয়ে থাকে। কিন্তু  সঠিক সময়ে সঠিক ব্যবস্থা না নিলে বাচ্চা দ্রুত অসুস্থ হয়ে পড়তে পারে। একধরনের পরজীবিকেই কৃমি বলা হয়। এটি বাচ্চাদের অন্ত্রে বাস করে এবং শিশুর খাবার থেকে পুষ্টি সংগ্রহ করে শক্তিশালী হয়ে উঠতে পারে।

বাচ্চাদের কৃমি তাড়ানোর ঘরোয়া উপায়
বাচ্চাদের কৃমি তাড়ানোর ঘরোয়া উপায়

সাধারণত শিশুদের বেশি ফিতাকৃমি বা সুতাকৃমির সংক্রমণ হতে দেখা যায়। একটি ফিতাকৃমি ৪০ ফুট বা তারও অধিক লম্বা হতে পারে। দূষিত খাবার খাওয়ার ফলে এর মাধ্যমে কৃমির ডিম বা লার্ভা শিশুর পাকস্থলীতে প্রবেশ করে থাকে। সুতাকৃমিকে অনেকের কাছে কেঁচোকৃমি নামেও পরিচিত। এই কৃমি খুবই ক্ষুদ্র, সাদা এবং সবসময় নড়াচড়া করে থাকে। এটি কৃমিটি মলদ্বারে বাস করে এবং মলদ্বারের আশেপাশে স্ত্রী কৃমি ডিম পাড়ে। বাচ্চাদের মধ্যে সবথেকে বেশি যে সংক্রমণ হয় তা হলো সুতাকৃমি।


কৃমি সংক্রমিত বোঝার উপায় 

কিছু কিছু সময় বাচ্চাদের কৃমির সংক্রমণের উপসর্গ বোঝা যায় না। সংক্রমণ হালকা বলে উপেক্ষা করা হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে বাচ্চারা কারণ ছাড়াই থুতু ফেলতে দেখা যায়। কারণ, কৃমি বাচ্চাদের মুখের লালা বাড়িয়ে দেয়। শিশুর মলে মারাত্মক দুর্গন্ধ হয়ে থাকে। আর স্ত্রী কৃমি ডিম দেওয়ার জন্য মলদ্বারে চলে যায়। এ সময় বাচ্চাদের মলদ্বারের চারপাশে জ্বালা ও অস্বস্তি হয়। পেটে কৃমি হলে পেট ব্যথা, ডায়রিয়া, বমি, ক্ষুধামন্দা ভাব, ঘুমের অভাব, জন্ডিস, খিটখিটে ভাব, পেটে অস্বস্তি, পেট খারাপ, ফুসকুড়ি, আমবাত, কালশিটে এবং অন্যান্য এলার্জির মত ত্বকের অবস্থা, ঘন ঘন গ্যাস এবং পেট ফাঁপা, কোষ্ঠকাঠিন্য, আচরণগত পরিবর্তন ইত্যাদি উপসর্গ দেখা দেয়।


কেন কৃমি সংক্রমণ হয়

বিশেষ করে ছোট ছোট বাচ্চারা এবং অল্পবয়সী ছেলেমেয়েরা হামাগুড়ি দিয়ে চলাফেরা করার কারণে খুব সহজেই কৃমি সংক্রামিত হতে পারে । সাধারণত পরিবারের জীবনধারার উপর নির্ভর করে শিশুদের কৃমি সংক্রমণের বিষয়। সংক্রামিত খাদ্য বা পানি পান করা, স্বাস্থ্যবিধি বা অপরিচ্ছন্নতার অভাব, সংক্রামিত পৃষ্ঠতলের সংস্পর্শে আসা, কাঁচা বা ভালোভাবে রান্না ছাড়া খাবার খাওয়া, অপর্যাপ্তভাবে হাত ধোওয়া, সংক্রামিত ব্যক্তির সান্নিধ্যে আসার ফলে কৃমি সংক্রামিত হয়।


বাচ্চাদের কৃমি তাড়ানোর ঘরোয়া উপায়

অভিজ্ঞত চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ খাওয়ানোর পাশাপাশি বাচ্চাদের কৃমি থেকে মুক্তিলাভের জন্য ঘরোয়া উপায়গুলো মানতে পারেন। কাঁচা পেঁপে খাওয়াতে হবে। এতে পাপাইন নামে এনজাইম রয়েছে যা কৃমিনাশক হিসেবে বেশ ভালো কাজ করে। 

রসুন খাওয়া যেতে পারে। রসুন হচ্ছে প্রাকৃতিক কৃমিনাশক এজেন্ট এবং পরজীবী কৃমি নাশের জন্য কার্যকর একটি উপাদান।

 কুমড়া বীজে কিউকারবিটাসিন রয়েছে যা কৃমিদের পক্ষাঘাতগ্রস্ত করে তোলে এবং সেই সঙ্গে তাদের ধ্বংস করতে সাহায্য করে।

এছাড়াও পেটের কৃমির সঙ্গে যুদ্ধ করতে করলা অনেক সহায়ক। 

জলের সাথে মধু মিশিয়ে শিশুকে খাওতে পারেন। সেই সঙ্গে নিম বীজও বেশ ভালো কাজ করে। এর পরজীবী-বিরোধী বৈশিষ্ট্য অন্ত্রের কৃমি ধ্বংস করে। কেউ যদি এসব খেতে না চায় তাহলে গাজর খাওয়াতে পারেন। গাজরে ভিটামিন-এ থাকে যা শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলতে এবং অন্ত্রের পরজীবীদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সহায়তা করে। তাই নিয়মিত খালি পেটে গাজর খাওয়ার অনেক উপকারিতা আছে।

Post a Comment

Previous Post Next Post

যোগাযোগ ফর্ম